শ্রাবণ মেঘের দিন- একটি অসাধারণ চলচ্চিত্র!
একটি অসাধারণ চলচ্চিত্র শ্রাবণ মেঘের দিন। ১৯৯৯ সনে মুক্তিপ্রাপ্ত ছবিটি বাংলা চলচ্চিত্রের অন্যতম সেরা ছবি। পরিচালক হুমায়ুন আহমেদের নিজে লেখা একই নামের উপন্যাসের চিত্ররূপ হলো ছবিটি।
মতি মিয়া একজন গাতক (গায়ক), পরিবার পরিজন ছাড়া জীবন যাপন তার। একটা ছোট্ট ঘরে থাকে মতি মিয়া, একবেলা খেয়ে আরেক বেলা না খেয়ে বেচে থাকে। মুট কথা, একটা শোষিত সমাজের চিত্র তুলে ধরছে পরিচালক হুমায়ুন আহমেদ। গ্রামে শিক্ষা, স্বাস্থ্য, যোগাযোগ সব ক্ষেত্ৰে সমস্যা। শিশুদের শরীরে, মহিলাদের শরীরে ভিটামিন, মিনারেল, প্র'টিন জাতীয় পদার্থর বিরাট একটা অভাব তুলে ধরতে পেরছে শাহানার ছোট্ট বোন নীতুর মাধ্যমে। মতি মিয়াকে মনে মনে ভালবাসে ঐ গ্রামেরই কুসুম, তার গানের গলাও খুব ভাল, সে সব সময় ভাবে মতি মিয়াকে নিয়ে একটা গানের দল করে দেশে দেশে ঘুরে বেরাবে। কিন্তু ঢাকা থেকে আসা ঐ গ্রামের জমিদার নাতনি শাহানাকে প্রথম দেখা থেকেই ভালবাসে মতি, তবে জানেনা সে শাহানার মনের খবর । শাহানা তাকে একজন ভাল মানুষ হিসেবে মুল্যায়ন করে মাত্র।
ঐ গ্রামের বাসিন্দা পরান এর স্ত্রী প্রসব বেদনায় ছটফট করছিল, যিনি বাঁচার আশা ছেড়ে দেয়েছিল, জমিদারের নাতনি শাহানা একজন ডাক্তার এই ভেবে মতি মিয়া তাকে ডেকে আনে।
শাহানা এসে বুঝতে পারে উনার পেটের বাচ্চা উল্টে আছে। সে বইতে পড়েছে এর চিকিৎসার ব্যাপারে কিন্তু বাস্তবে কখনো করেনি, তবুও কোন উপায় না দেখে সাহস করে সেই সন্তান সাভাবিক ভাবে ডেলিভারি করাতে সক্ষম হয়। এবং যেই জমিদারকে এলাকার সবাই ঘৃনার চোখে দেখত তারা সবাই এখন তাকে সম্মান করে।
শাহানা এসে বুঝতে পারে উনার পেটের বাচ্চা উল্টে আছে। সে বইতে পড়েছে এর চিকিৎসার ব্যাপারে কিন্তু বাস্তবে কখনো করেনি, তবুও কোন উপায় না দেখে সাহস করে সেই সন্তান সাভাবিক ভাবে ডেলিভারি করাতে সক্ষম হয়। এবং যেই জমিদারকে এলাকার সবাই ঘৃনার চোখে দেখত তারা সবাই এখন তাকে সম্মান করে।
এদিকে কুসুমের বাবা উজান থেকে একটি ছেলে সুরুজ কে নিয়ে আসে কুসুমের সথে বিয়ে দেয়ার জন্য। মতির প্ৰেমে কুসুম পাগল হয়ে যায়, বিয়ের আগের দুপুর রাত্ৰে মতির বাসায় ছুটে যায় কুসুম। মতি বলে, "চইলা যা কুসুম, কাইল তোর বিবাহ হইবো।" মতি মিয়া কুসুমকে আদর করতে পারে না।
মতি মিয়াকে হারানোর শোকে কুসুম গায়, "আমার ভাঙা ঘরে... "
মতি মিয়াকে হারানোর শোকে কুসুম গায়, "আমার ভাঙা ঘরে... "
অতি মর্মান্তিক দৃশ্য।
একদিকে কুসুমের বিয়ের আয়োজন চলছে অন্যদিকে জমিদারের নাতনিরা ঢাকায় ফিরে যাচ্ছে জমিদার সহ, জমিদার ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় পাকিস্তানি মিলিটারীদের বিভিন্ন ভাবে সহায়তা করেছিল তাই গ্রামের সবার কাছে ক্ষমা চেয়ে তার জমিদার বাড়ি একটি হাসপাতালের জন্য দান করে বিদায় নেয়, আর তাই গ্রামের প্রায় সবাই চলে আসে তাদের বিদায় জানাতে। কুসুম বাড়িতে একা, মতিকে না পাওয়ার কষ্টে সে বিষ পান করে। কুসুমের মা টের পেয়ে সবাইকে ডাকে এবং তাকে নিয়ে মতি আর সুরুজ নৌকায় ছোটে ডাক্তার শাহানার ছুতে কিন্তু মাঝপথেই সোয়া চান পাখি চিরনিদ্রায় শায়ীত হয়।
নায়ের বৈঠা ছেড়ে দিয়ে মতি কেঁদে কেঁদে গেয়ে উঠে "শুয়া চান পাখি আমি ডাকিতাছি তুমি ঘুমাইছো নাকি...।"
চোখের পানি ফেলতে বাধ্য হয়ে যায় দর্শক। কি করুণ হৃদয় ভাঙা সমাপ্তি।
হুমায়ুন আহমেদের লেখা গান, বারী ছিদ্দিকী, সুবীর নন্দীর সুরে এক নতুন মাত্রা দিয়েছে ছবিটিকে। প্রতিটি গানে হারিয়ে যেতে চায় শ্রোতা। একটি অসাধারণ চলচ্চিত্র "শ্রাবণ মেঘের দিন"।
হুমায়ুন আহমেদের লেখা গান, বারী ছিদ্দিকী, সুবীর নন্দীর সুরে এক নতুন মাত্রা দিয়েছে ছবিটিকে। প্রতিটি গানে হারিয়ে যেতে চায় শ্রোতা। একটি অসাধারণ চলচ্চিত্র "শ্রাবণ মেঘের দিন"।
Comments
Post a Comment